User:Md Khaled ibne malek

From Wikipedia, the free encyclopedia

‘নির্ভীক’ ভাস্কর্য মহান মুক্তিযুদ্ধে নোয়াখালী জেলা পুলিশের গৌরবদীপ্ত অবদান স্মরণে পুলিশ লাইন্সের প্রবেশমুখে নির্মিত হয়েছে ভাস্কর্য ‘নির্ভীক’। স্বাধীনতা যুদ্ধে নোয়াখালী জেলা পুলিশের বীরত্বগাথা তুলে ধরা হয়েছে এই ভাস্কর্যে। ভাস্কর্যের সম্মুখভাগে তৎকালীন আরআই ছদ্রতুল্লাহ খান চৌধুরী একজন মুক্তিযোদ্ধার হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছেন। অস্ত্র সরবরাহে সহযোগিতা করছেন সুবেদার ফোর্স মমতাজুর রহমান চৌধুরী। পেছনে অস্ত্র হাতে প্রহরারত একজন পুলিশ সদস্য। অন্যপাশে অস্ত্র গ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধার পেছনে আরও এক মুক্তিযোদ্ধা অস্ত্রপ্রাপ্তির অপেক্ষায়। তাদের পেছনে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে অস্ত্র কাঁধে যুদ্ধে যেতে দেখা যাচ্ছে। ভাস্কর্যটি নির্মিত হয়েছে ৬ ফুট উচু, ১২ ফুট প্রস্থ ও ২৪ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি বেদীর ওপর। নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত হয়েছে ভূ-গর্ভস্থ পাথর, বালু, সিমেন্ট ও রড। বেদীর চারপাশে রয়েছে টেরাকোটা (পোড়ামাটির শিল্প)। সামনের টেরাকোটার অংশে বামপাশে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, ডানে রেডিওতে পুলিশ সদস্যদের ৭ মার্চের ভাষণ শোনার দৃশ্য। বেদীর ডানপার্শ্ব অংশে নারী মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ যাত্রার দৃশ্য, মুজিবনগর সরকারকে গার্ড অব অনার প্রদানের দৃশ্য, রণাঙ্গনের পথে মুক্তিযোদ্ধারা চিত্রিত হয়েছে। বেদীর পেছনের টেরাকোটা অংশে তদানীন্তত নোয়াখালী জেলা পুলিশ লাইন্স অস্ত্রাগার, কনস্টেবল মনিরুল হক শহিদ হওয়ার বীরত্বগাথার সাক্ষী ফেনীর সিও বিল্ডিং, তৎকালীন এসপি আব্দুল হাকিমের বাংলো যেখান থেকে তাঁকে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়, ১৯৭১ সালের ওয়্যারলেস রুম, পিটিআই মাঠ যেখানে পুলিশের অস্ত্র দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। বেদীর বামপার্শ্বস্থ টেরাকোটা অংশে সদ্য জন্ম নেয়া বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ২২ জুন বঙ্গবন্ধুর নোয়াখালীতে জনতার মাঝে আগমন, অভিবাদন গ্রহণ এবং প্যারেড পরিদর্শন সুনিপূণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ভাস্কর্যের মূল চত্বরে বেদীর পেছনের অংশে দুইপাশে আলাদাভাবে ১১ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৭ ফুট প্রস্থের দুটি টেরাকোটার দেয়াল নির্মিত হয়েছে । বাম পাশের দেয়ালে ‘নির্ভীক’ ভাস্কর্য সম্বন্ধীয় ঐতিহাসিক কথন আর ডান পাশে ১৯৭১ সালের শহিদ পুলিশ সুপার আব্দুল হাকিম এর প্রতিকৃতি। ভাস্কর্য এলাকায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যবর্ধনে এর দুইপাশে ফুলের বাগান এবং সম্মুখে একটি ছোট্ট লেক নির্মাণ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হিতৈষী ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তায় প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে ভাস্কর্যটি নির্মিত হয়েছে। নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর হোসেনের পরিকল্পনা ও প্রত্যক্ষ তদারকিতে ৮ মাস সময় ধরে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়। ভাস্কর্যটির নির্মাতা দীপক রঞ্জন সরকার, পরিচালক, ড্রিমহান্ট ক্রিয়েটিভ ও স্বাধীন ভাস্কর। নির্ভীক ভাস্কর্যটি শুধু একটি শিল্পকর্ম নয়, এটি অগ্নিঝরা একাত্তরের একটি দুঃসাহসিক অধ্যায়ও। ২৮/০৭/২০২১ খ্রিঃ বাংলাদেশ পুলিশের মাননীয় ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন।